জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কৃষিখাতেও, কমছে ফলন
দেশের বিভিন্ন স্থানে এবার বোরো মওসুমে অনেক জাতের ধান চিটা হয়েছে। ফলে ফলন কমেছে। অনেক কারণেই ধান চিটা হতে পারে। তবে ব্রি-২৯ জাতের চিটা অতিরিক্ত গরমের কারণেই হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আর এই তাপমাত্রা বাড়ার কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে বাংলাদেশেও। এর বিরূপ প্রভাব কৃষিতে পড়তে পারে বলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের এক গবেষণায় বলা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, গত ৩০ বছরে দেশের তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। এ হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ একর প্রতি বোরো ধানের ফলন ২০ থেকে ৫০শতাংশ কমতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা কর্মটির তত্ত্বাবধায়ক পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম আশরাফ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা গবেষণা করে দেখতে চেয়েছি ২০৩০, ২০৫০ ও ২০৭০ সালে কৃষির উৎপাদনে এর কী প্রভাব পড়বে। আমরা বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা ও সূর্যালোক নিয়ে গবেষণা করেছি।"
তিনি বলেন, "তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব কৃষিতে ভালোভাবেই পড়বে। আমাদের মোট ধান উৎপাদনের ৫০ ভাগই আসে বোরো থেকে। বর্তমানে যে সব জাতের বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এসব ধানের ফলন ২০-৫০ ভাগ কমে আসবে। রাজশাহী ও উত্তরবঙ্গ বেশি বিরূপ প্রভাবের মুখে পড়বে। তবে ধান রোপার সময় এগিয়ে আনলে প্রভাব কম পড়বে।"
অধ্যাপক আশরাফ বলেন, "উপকূলের জন্য যেমন লবণসহ ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। তেমনি আমাদের তাপমাত্রাসহ ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন করতে হবে। যতদূর জানি, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।"
বুয়েটের এ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বলেন, "আমাদের দেশের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। গত ৩০ বছরের প্রায় এক ডিগ্রি বেড়েছে। সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুটোই বাড়ছে।"
বাংলাদেশে বোরো ধানের ফলনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শীর্ষক ওই গবেষণায় দেখা যায়, জানুয়ারি মাস ছাড়া অন্য সব মাসেরই তাপমাত্রা বাড়ছে। এর মধ্যে ফেব্র"য়ারি, এপ্রিল ও মে মাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বেশি। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তথ্য উপাত্ত নিয়ে ওই গবেষণা করা হয়।
সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের সাইনপটিক বিভাগের প্রধান ড. নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কোথাও যেমন বৃষ্টি বাড়তে পারে আবার কোথাও খরাও হতে পারে। তাপমাত্রা বা বৃষ্টি সব জায়গায় সমানভাবে বাড়বে না বা কমবে না। এক্ষেত্রে সারা দেশের গড় উপাত্ত দিয়ে কাজ করা যাবে না।"
গবেষণায় আভাস দেওয়া হয়েছে, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কম হবে। আবার ২০১৮ সালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হবে।
ব্রি'র উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বুয়েটের ওই গবেষণায় তাপমাত্রা বাড়লে ২০৭০ নাগাদ বোরো ফলনের উপর কি প্রভাব পড়তে পারে তার একটি পূর্বাভাস বলা হয়েছে। আমাদের এখানে তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা আছে। এতে ফলনও কমবে।
তিনি বলেন, উচ্চ তাপমাত্রাসহ ও নিম্ন তাপমাত্রাসহ ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা অবশ্যই আমাদের আছে।
ব্রি'র এই বিজ্ঞানী জানান, মাঠ পর্যায় থেকে খবর এসেছে এবার ব্রি-২৯ জাতের ধানের চিটা হয়েছে। এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অন্যান কারণও থাকতে পারে।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে বাংলাদেশেও। এর বিরূপ প্রভাব কৃষিতে পড়তে পারে বলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের এক গবেষণায় বলা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, গত ৩০ বছরে দেশের তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। এ হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ একর প্রতি বোরো ধানের ফলন ২০ থেকে ৫০শতাংশ কমতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা কর্মটির তত্ত্বাবধায়ক পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম আশরাফ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা গবেষণা করে দেখতে চেয়েছি ২০৩০, ২০৫০ ও ২০৭০ সালে কৃষির উৎপাদনে এর কী প্রভাব পড়বে। আমরা বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা ও সূর্যালোক নিয়ে গবেষণা করেছি।"
তিনি বলেন, "তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব কৃষিতে ভালোভাবেই পড়বে। আমাদের মোট ধান উৎপাদনের ৫০ ভাগই আসে বোরো থেকে। বর্তমানে যে সব জাতের বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এসব ধানের ফলন ২০-৫০ ভাগ কমে আসবে। রাজশাহী ও উত্তরবঙ্গ বেশি বিরূপ প্রভাবের মুখে পড়বে। তবে ধান রোপার সময় এগিয়ে আনলে প্রভাব কম পড়বে।"
অধ্যাপক আশরাফ বলেন, "উপকূলের জন্য যেমন লবণসহ ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। তেমনি আমাদের তাপমাত্রাসহ ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন করতে হবে। যতদূর জানি, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।"
বুয়েটের এ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বলেন, "আমাদের দেশের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। গত ৩০ বছরের প্রায় এক ডিগ্রি বেড়েছে। সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুটোই বাড়ছে।"
বাংলাদেশে বোরো ধানের ফলনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শীর্ষক ওই গবেষণায় দেখা যায়, জানুয়ারি মাস ছাড়া অন্য সব মাসেরই তাপমাত্রা বাড়ছে। এর মধ্যে ফেব্র"য়ারি, এপ্রিল ও মে মাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বেশি। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তথ্য উপাত্ত নিয়ে ওই গবেষণা করা হয়।
সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের সাইনপটিক বিভাগের প্রধান ড. নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কোথাও যেমন বৃষ্টি বাড়তে পারে আবার কোথাও খরাও হতে পারে। তাপমাত্রা বা বৃষ্টি সব জায়গায় সমানভাবে বাড়বে না বা কমবে না। এক্ষেত্রে সারা দেশের গড় উপাত্ত দিয়ে কাজ করা যাবে না।"
গবেষণায় আভাস দেওয়া হয়েছে, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কম হবে। আবার ২০১৮ সালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হবে।
ব্রি'র উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বুয়েটের ওই গবেষণায় তাপমাত্রা বাড়লে ২০৭০ নাগাদ বোরো ফলনের উপর কি প্রভাব পড়তে পারে তার একটি পূর্বাভাস বলা হয়েছে। আমাদের এখানে তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা আছে। এতে ফলনও কমবে।
তিনি বলেন, উচ্চ তাপমাত্রাসহ ও নিম্ন তাপমাত্রাসহ ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা অবশ্যই আমাদের আছে।
ব্রি'র এই বিজ্ঞানী জানান, মাঠ পর্যায় থেকে খবর এসেছে এবার ব্রি-২৯ জাতের ধানের চিটা হয়েছে। এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অন্যান কারণও থাকতে পারে।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম