নওগাঁর মান্দা উপজেলায় মালী থেকে ড্রাইভার

নওগাঁ জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা মান্দা উপজেলার প্রায় সোয়া ৪ লক্ষ লোকের সার্বিক পরিসি'তি দেখাশুনার মুনিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি সরকারের বেতন ভূক্ত একজন ড্রাইভারকে বসিয়ে রেখে উপজেলা পরিষদের মালীকে ড্রাইভিং কাজে ব্যবহার করা করছেন। জানা যায়, উপজেলার সরকারি ড্রাইভার বাসায় বসিয়ে রেখে সরকারি বেতন দিয়ে উপজেলা পরিষদের মাষ্টার রোলের বেতনভূক্ত একজন মালিকে দিয়ে সরকারের সেই দামী গাড়ীটি চালানো হচ্ছে। একজন অদক্ষ ভারী লাইসেন্স বিহীন ড্রাইভারকে দিয়ে গাড়ী চালানোর নীতিমালা আছে কি-না তা নিয়ে উপজেলার সুধীজনের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার ঝড় চলছে। বড় কর্তার ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কেউ নেই। কেন বা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সরকারের নিয়োগকৃত ড্রাইভারকে বসিয়ে রেখে তার মালীকে দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করছে তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে উপজেলায় নানা রকম গুঞ্জন চলছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে নওগাঁ সদর, মান্দা, নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার, মহাদেবপুর, বদলগাছী উপজেলায় সংস'াপন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদেয় দামী পাজোরো গাড়ীগুলো নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ সরকারি কাজকর্ম করার জন্য চষিয়ে বেড়াচ্ছে। মান্দা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের গাড়ীটি কখনও কখনও তার পারিবারিক কাজে পাবনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা শহরে দৌড়ে বেড়ায়। গোপন সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা চালানোর জন্য গাড়িটি পরপর দু'বার দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেও গাড়িটির আংশিক ক্ষতিও হয়েছে। গাড়িটির উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা পরিষদের মাষ্টার রোলের একজন ছেলেকে দিয়ে গাড়িটি চালানোর সময় কোন একদিন ওই অদক্ষ ড্রাইভারটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে গাড়িটির ডানদিকের সামনের গেটের অংশ ও পিছনের বামপারের আংশিক ক্ষতি সাধন করেছে। এর পরও উপজেলা অফিসারের হুশ হয়নি। সরকারের নিয়মিত ড্রাইভারকে বসিয়ে রেখে তার মনোনিত অদক্ষ লোক দ্বারা গাড়ি চালানোর জন্য উপজেলার সচেতন সুধী জনের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকার গাড়ি একজন অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা পরিচলানা করায় যে কোন মুহুর্তে অপ্রীতিকর ঘটনাসহ বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের এত দামী গাড়ির ক্ষতিপূরণের দায়ভার কার হাতে? প্রায় দু'বছর আগে মান্দা উপজেলা প্রশাসন এ গাড়িটি পেয়েছে। সংস'াপন (পুল)-এর নিয়োগকৃত ড্রাইভার দ্বারা গাড়িটি চালানোর কথা থাকলেও মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কি কারনে তা আমলে আনছেন না যা নিয়ে উপজেলার মানুষ শংকিত। ভারী লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা সরকারের এত বড় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা দামি গাড়িটি চালানো হচ্ছে যা দেখার কেই নেই। উপজেলা পরিষদের অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুন্সী মনিরুজ্জামান এর ব্যবহৃত গাড়িটির বর্তমান ড্রাইভার মোঃ রেজাউল ইসলাম সে উপজেলা পরিষদের একজন মাষ্টার রোলের নিয়োগকৃত মালী। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়িটি নিজ জেলা শহর থেকে অন্য জেলা শহরে কোন কাজের জন্য যেতে হলে ডিসি বা কমিশনারের অনুমতির প্রয়োজন হয়। অথচ অনুমতি না নিয়েই মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার ব্যক্তিগত অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা নিজের প্রয়োজনে সকল কাজকর্ম চষিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: আহসান হাবিব তালুকদার- এর সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকে জানান, নওগাঁর ১১টি উপজেলার রাণীনগর উপজেলা বাদে সবগুলোতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ী আছে। জেলা শহরের বাহিরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ী নিয়ে কাজের জন্যই হোক নতুবা গাড়ী ঠিক করার কোন কাজে যেতে হোক জেলা প্রশাসককে জানিয়ে যেতে হয়। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোন কাজে এ গাড়ী ব্যবহার করার নিয়ম নেই। মান্দা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের গাড়ী জেলা শহরের বাহিরে যাওয়া সম্পর্কে আমার জানা নেই। উক্ত উপজেলার নির্বাহী অফিসারের মাষ্টাররোলে নিয়োগকৃত মালীকে ড্রাইভার হিসাবে গাড়ী চালানো সম্পর্কেও আমার জানা নেই। সরকারি ড্রাইভারকে বসিয়ে রেখে কেন মালিকে দিয়ে গাড়ী চালানো হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস'া গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

Popular posts from this blog

“নওগাঁয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা”

নওগাঁয় পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে,মেলায় অবৈধ ব্যাবসা

দূর্নীতি ছেয়ে আছে নওগাঁ বিটিআরএ