সূরা এখলাসের বরকতগুলো

হযরত আনাস (রা•) থেকে বর্ণিত- জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা•)-এর কাছে এসে আরজ করল, আমি এই সূরাটি খবু ভালোবাসি। তিনি বললেন, ‘এর ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে দাখিল করবে।’ হযরত আবু হোরায়রা (রা•) বর্ণনা করেন- একবার রাসূলুল্লাহ (সা•) বললেন, ‘তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদের কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ শুনাবো।’ অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলে তিনি সূরা এখলাস পাঠ করে শুনালেন। তারপর বললেন, ‘এ সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।’ আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ বর্ণনায় বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তাকে বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়।’

ওকবা ইবনে আমের (রা•)-এর বর্ণনা মতে- রাসূলুল্লাহ (সা•) বলেন, ‘আমি তোমাদের এমন তিনটি সূরার কথা বলছি, যা তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল ও কোরআনসহ সব কিতাবেই রয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততক্ষণ ঘুমাতে যাবে না যতক্ষণ সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর।’ ওকবা (রা•) বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এ আমল ছাড়িনি।

সূরা এখলাসের বঙ্গানুবাদ হচ্ছে- (১) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক (২) আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন (৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি (৪) এবং তার সমতুল্য কেউ নেই। ‘বলুন’ কথার মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা•)-এর প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। এতে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে মানুষকে পথ প্রদর্শনের আদেশ রয়েছে। ‘আল্লাহ্‌’ শব্দটি এমন এক সত্তার নাম, যিনি চিরকাল আছেন, চিরকাল থাকবেন। তিনি সর্বগুণের আধার ও সর্বদোষ থেকে পবিত্র। তিনি এক বা একাধিক উপাদান দিয়ে তৈরি নন। তাঁর মধ্যে একাধিকত্বের কোন সম্ভাবনা নেই এবং তিনি কারও তুল্য নন। এটা তাদের সেই প্রশ্নের জওয়াব, যাতে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আল্লাহ্‌ কিসের তৈরি?
সূরা এখলাস কোরআন শরিফের ক্ষুদ্রতম সংক্ষিপ্ত সূরা হলেও এর সার-শিক্ষা-গৌরব-মাহাত্ম্য অতি অসাধারণ। এই পবিত্রতম সংক্ষিপ্ত সূরায় অংশীবাদিতা, পৌত্তলিকতা, অবতারবাদ, পিতৃত্ববাদ ও পুত্রত্ববাদ প্রভৃতি আল্লাহ সম্বন্ধীয় যাবতীয় ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রতিবাদ করে যেভাবে আল্লাতায়ালার একত্ব, অদ্বিতীয়ত্ব ও সত্য রূপ প্রকাশ করা হয়েছে তার কোন তুলনা নেই। এজন্যই সূরা এখলাস সমগ্র কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ বলে বর্ণিত হয়েছে। হযরত রাসূলুল্লাহ (সা•) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘সূরা এখলাস পাঠ করলে সমগ্র কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ পাঠের পুণ্য লাভ করা যায়।’ হযরত রসূলুল্লাহ (সা•) প্রত্যহ শয়নকালে ‘সূরা এখলাস’, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ এ তিনটি সূরা পড়ে নিজের দু’হাতে ও শরীরে ফুৎকার প্রদান করতেন। তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রতি দিবস ও রাতে ওই সূরাত্রয় তিনবার করে পাঠ করে, তারা জগতের সব বিপদ-আপদ ও অনিষ্টকারিতা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।’

সূএ: ourislam.org

Popular posts from this blog

“নওগাঁয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা”

নওগাঁয় পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে,মেলায় অবৈধ ব্যাবসা

দূর্নীতি ছেয়ে আছে নওগাঁ বিটিআরএ