মুজিব কোটের ছাঁয়ায় নওগাঁর ভবিষৎ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে চলছে

মুজিব কোটের কালো ছায়ায় দিন দিন নওগাঁর বিভিন্ন অফিস আদালতের কাজ কর্ম ঢাকা পড়তে শুরু করেছে। শক্ত হাতে এ ছায়ার প্রসার রোধ করতে না পারলে নওগাঁয় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়া সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্খিতির অবনতি ঘটবে বলে আশংকা করা যাচ্ছে। ২৯ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন ও ২২ জানুয়ারীর উপজেলা নির্বাচনে নওগাঁয় আওয়ামী লীগের ব্যাপক বিজয়ের পর নওগাঁর বিভিন্ন অঞ্চলে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগি রাজনৈতিক ব্যবসায়ী রাতারাতি নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা বানিয়ে সফেদ পাঞ্জাবির উপর রংচটা কালো মুজিব কোট পড়ে বিভিন্ন অফিস আদালতে খবরদারি শুরু করে। এরা বিভিন্ন থানা ও উপজেলা অফিসে গিয়ে নিয়মনীতি বহির্ভূত ভাবে বিভিন্ন কাজের তদবির করায় থানার পুলিশ পরিদর্শক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গন সরকারি কাজে বিড়ম্বনার সম্মূখিন হচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশ্য দু-একটি উপজেলায় পুলিশ পরিদর্শক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গন এদের পাত্তা না দেওয়ায় এরা তাদের শাস্তিযোগ্য বদলির হুমকি দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয় লাভের পরই জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায় চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা বহুল আলোচিত নিয়ামতপুরের ভাবিচা ইউনিয়নের নাকইল গ্রামের খাস খতিয়ান ভূক্ত ৩৯ একর জমি দখলে তৎপর হয়ে উঠে। এসময় স্খানীয় সংসদ সদস্য শ্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং নিয়ামতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক কামরুল হাসান এই ভূমিদস্যুদের সহায়তা না দেওয়ায় তারা সরাসরি মাঠে নামতে পারে না। প্রসঙ্গত এই ভূমিদস্যুরা বিগত ২০০৭ সালের ২০ মে এই খাস জমি দখলের অপচেষ্টায় নাকইল গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ীঘর ভাংচুর সহ লুটপাট চালায়। সে সময় সেনা, জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের বড়কর্তারা নাকইল পরিদর্শন করে সেখানে অবস্খানরত ভূমিহীনদের নিরাপদ বসবাসের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় এ ভূমিদস্যুরা নিরব হয়ে পড়েছিল। ভোটের পর এরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠলে নিয়ামতপুর থানা পুলিশ গত ৫ জানুয়ারী এক নোটিশ বলে উল্লেখিত স্খানে ১৫৪ ধারা জারি করে। কিন্তু গত বিশ্ব ইসতেমার সময়ে নিয়ামতপুরের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি)র অনুপস্খিতির সুযোগে এই ভূমিদস্যুরা নাকইল গ্রামের ভুমহীনদের মারপিট সহ বেশ কিছু জমি দখল করে সেখানে ধানের আবাদ করে। নাকইলের বাসিন্দারা এ ব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলে নিয়ামত পুর থানা পুলিশ শুধু একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহন করেই বিষয়টি চেপে গেছেন। নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুর পুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ সমর্থিতদের অত্যাচারে বিরোধী দলের সদস্যরা গ্রামছাড়া হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে এখানে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের প্রত্যক্ষ মদদ থাকায় আওয়ামীলীগ কর্মিদের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও এরা পুলিশী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

জেলার পত্নীতলা উপজেলায় এ সকল মুজিব কোর্টধারীরা উপজেলার সকল ডিপটিউব ওয়েল সহ বালু মহাল দখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারী উপজেলার নজিপুর সদরে আওয়ামীলীগ পরিচয়ধারীরা এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বাড়ী দখল করে নেয়। অবশ্য পরে পুলিশী হস্তক্ষেপে তারা বাড়ীটি ছেড়ে দিলেও বাড়ী তালা বদ্ধ করে চাবি একজন স্খানীয় আওয়ামীলীগ নেতার কাছে গচ্ছিত রাখা হয়েছে বলে ভূক্তভোগি পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারী দখলকৃত একটি ডিপটিউব ওয়েলের ভাগাভাগি নিয়ে একই দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছে।

জেলার মহাদেবপুর ও বদলগাছি উপজেলায় এ সকল মুজিবকোটধারীরা থানায় এবং উপজেলায় ব্যাপক তদবিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বিএনপির দুর্গ হিসাবে পরিচিত উপজেলা দুটিতে মহাজোট প্রার্থীর নিরংকুশ জয় হয়েছে জোট প্রার্থী সাবেক ডেপুটি স্পীকারের অনিয়ম দুর্নীতির কারনে এমন কথা বলছে সেখানকার ভোটাররা । এ উপজেলায় দুটিতে আ’মীলীগের নেতা হওয়ার অসম প্রতিযোগিতা । স্ব ঘোষিত এক মহিলা নেত্রীর ছত্র ছায়ায় এরা বিভিন্ন মামলায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মীদের আসামী করতে থানা কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনি এক মামলার কারণে বদলগাছি উপজেলার এক ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন স্বনামধন্য বীমাকর্মি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছেন।

৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে দলের সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল জলিলের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে তখন নওগাঁর রাজনীতিতে এ সকল সুবিধাভোগিরা স্খান করতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে দলে মো: আব্দুল জলিল নিস্ক্রিয় থাকায় এরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠার সুযোগ পেয়েছে বলে নওগাঁর সাধারণ মানুষ মনে করছেন।
সংবাদঃ এনএয়াই বাংলা. কম

Popular posts from this blog

“নওগাঁয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা”

নওগাঁয় পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে,মেলায় অবৈধ ব্যাবসা

দূর্নীতি ছেয়ে আছে নওগাঁ বিটিআরএ