বাতাসে লাশের গন্ধ

জেলেপল্লী শরণখোলার বাতাস এখন মাছ নয়, ভারী হয়ে উঠেছে লাশের দুর্গন্ধে। তিন দিন আগে প্রলয়ঙ্করী ঝড় 'সিডর' এর আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপকূলীয় এ জেলে গ্রামটি। গ্রামের পথে হেঁটে গেলে মনে হবে এ যেন এক মৃত্যুপুরী। চারপাশে শুধু নারী, পুরুষ আর শিশুর মৃতদেহ। ধানক্ষেত আর বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে পড়ে থাকা লাশগুলো দেখে উদ্ধারকর্মী ও সাংবাদিকরাও চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি। রোববার বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার এসেছিল খাদ্য, ওষুধ ও পানি নিয়ে। স্থানীয় এক বৃদ্ধ উদ্ধার কর্মীদের কাছে চাইলেন লাশ ঢাকার কাপড়। নদীর তীর থেকে একটি মৃতদেহ তুলে আনার সময় বৃদ্ধ জানালেন, সারাদিন ধরে তারা নদী থেকে লাশ তুলে আনছেন। এই লাশগুলোকে কবর দেওয়ার জন্য কাফনের কাপড় দরকার। গ্রামের অপর এক অধিবাসী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন,স্বজন হারানোর বেদনা অসহনীয়। কিন্তু নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য খাবার আর ওষুধ দরকার। বলেশ্বর নদীতে একের পর এক লাশ ভেসে উঠছে বলে জানালেন মোহাম্মদ ইউসুফ। পানি থেকে তোলা ফুলে ওঠা লাশের গন্ধে চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে গেছে। মানুষের লাশ ছাড়াও প্রচুর গবাদিপশুর মৃতদেহ ভাসছে বলেশ্বর ও আশপাশের নদীর বুকে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক মনির হাসান জানান, অনেক এলাকাতে ইতিমধ্যেই ডায়রিয়া ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে। ১৯৯১ সালের দুর্যোগের কথা স্মরণ করে ষাট বছরের এক বৃদ্ধ বললেন, প্রতি দশ-পনের বছর পর পর এ ধরনের দুর্গতি দেখে দেখে তারা ক্লান্ত। "জীবনে যেন আর এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় -বললেন বৃদ্ধ।"

Popular posts from this blog

“নওগাঁয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা”

নওগাঁয় পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে,মেলায় অবৈধ ব্যাবসা

দূর্নীতি ছেয়ে আছে নওগাঁ বিটিআরএ