সচল হচ্ছে রাজনীতির চাকা


ক্রমেই সচল হচ্ছে রাজনীতির চাকা। জরুরি অবস্থার কারণে দীর্ঘদিন চুপচাপ থাকার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন রাজনীতিবিদরা। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা সরাসরি সরকারবিরোধী বক্তব্য রাখতে শুরু করেছেন। কয়েকদিন আগেও যারা রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকতেন তারাও হয়ে উঠছেন সোচ্চার। দ্রব্যমূল্য, দুই নেত্রীর মুক্তি ও নির্বাচন নিয়ে তারা খোলামেলা কথা বলছেন। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাপে ঘোষণা করছেন আন্দোলনের কর্মসূচি। দাবি জানাচ্ছেন জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের। ঐক্য গড়ার কথা বলছেন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে।মূলত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ইস্যুতেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক নেতারা। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিই মুখ খুলে দিয়েছে তাদের। এর সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে দুই নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি। আগামী ২০ এপ্রিলের আগেই গণঅনশনের কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় নেতারা এ মুহর্তে কোনো ধরনের কর্মসূচি দিতে আগ্রহী না থাকলেও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবির মুখে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি, চিকিত্সার জন্য বিদেশ পাঠানো, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে সারাদেশে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।জানা যায়, এ মূহর্তে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন না। আরও সময় অতিবাহিত করতে চেয়েছিলেন তারা। আগামী রমজান মাস পর্যন্ত অবস্থা পর্যবেক্ষণের কৌশল নিয়েছিলেন। কিন্তু কারাবন্দি সভানেত্রী শেখ হাসিনার শারীরিক অবস্থার অবনতি, কানের উপযুক্ত চিকিত্সা না হওয়া, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সেন্টিমেন্ট ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নীরব থাকায় কর্মীদের কাছে বিতর্কিত হওয়ার মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় নেতারা। দিন দিন তাদের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। এ পর্যায়ে কর্মসূচি দিয়ে আপাতত মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন নেতারা।অপরদিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বিভেদ থাকলেও বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা রয়েছেন ঐক্যবদ্ধ। বিএনপির ভাঙাগড়ার খেলায় কুশীলবদের চিহ্নিত করে একাট্টা হয়ে আছেন তারা। তাদের এখন প্রধান দাবি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। যেকোনো উপায়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান তারা। এর জন্য আন্দোলনেও যেতে প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপ দিচ্ছেন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য গড়ে দুই নেত্রীর মুক্তির দাবি জোরদার করার পক্ষে মত দিচ্ছেন। সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় তাদের এ দাবি জোরাল হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় নেতারাও কর্মসূচি দেয়ার আশ্বাস দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে। আগামী ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ বাম রাজনৈতিক দলগুলো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, সারাদেশে ঘরোয়া রাজনীতি চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রতিনিয়ত সরকারের ওপর চাপ দিয়ে আসছে। এ দলগুলো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবিও জানাচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়ার ঘোষণার তারা প্রচন্দ বিরোধিতা করেছেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু না এগোলে তারাও রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে।

Popular posts from this blog

“নওগাঁয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা”

নওগাঁয় পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে,মেলায় অবৈধ ব্যাবসা

দূর্নীতি ছেয়ে আছে নওগাঁ বিটিআরএ